Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

চরাঞ্চলে মিশ্র ফসল হিসেবে মসলার চাষাবাদ

চরাঞ্চলে মিশ্র ফসল হিসেবে মসলার চাষাবাদ
ড. মো. আলাউদ্দিন খান১ ড. মো. শহিদুল আলম২ মো. মুশফিকুর রহমান৩
বিভিন্ন নদী বা শাখানদীর মাধ্যমে উভয় পাশে সময়ের সাথে সাথে বিপুল পরিমাণে বালু, পলি এবং কাদামাটি জমা হয়ে যে ভূখ-ের সৃষ্টি হয় তাকে চর (ঈযধৎষধহফ) বলা হয়। চর দুই ধরনের হয়ে থাকে ক) সংযুক্ত চর, যা মূল ভূখ-ের সংলগ্নে থাকে এবং খ) দ্বীপ চর, যা মূল নদীর খালসমূহের সাথে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো থাকে। বাংলাদেশে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধলেশ^রী ইত্যাদি নদীর তীরে প্রায় ৮.৩ লাখ হেক্টর চর আছে, যার প্রায় ৫.২-৭.৯ লাখ হেক্টর চাষযোগ্য। এদেশের চরাঞ্চলে প্রায় ৬৫ লাখ লোক বসবাস করে। চরের জমিতে পুষ্টি উপাদান এবং জৈব পদার্থের ঘাটতি থাকে। বাংলাদেশে লবণাক্ততা মুক্ত চরাঞ্চলগুলো হলো কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, বাজশাহী, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর চরের জমিতে ফসল চাষ করা হয়। চরাঞ্চলের  কৃষকরা সাধারণত তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে স্থানীয় বিভিন্ন জাতের ফসল চাষ করে। বাংলাদেশে মসলা ফসল অত্যন্ত জনপ্রিয়। মূল ভূখ-ে চাষযোগ্য জমির স্বল্পতার কারণে মসলা ফসলের জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না। এ দেশে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, ধনিয়া, কালিজিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মসলাজাতীয় ফসল। এ সমস্ত মসলা ফসলের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এ যুগে ক্রমবর্ধমান জনসখ্যার খাবার উৎপাদনে প্রতিকূল চরের ইকোসিস্টেমে বর্ণিত মসলা ফসলগুলোর ফলন এবং উৎপাদন উভয়ই বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সে লক্ষ্যে টেকসই  ফসল উৎপাদন এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চরাঞ্চলে বর্ণিত ফসলের উন্নত জাত ও আধুনিক চাষ পদ্ধতির প্রয়োগ এবং একক ফসলসহ মিশ্র ফসলের চাষাবাদ করা আবশ্যক।
সংযুক্ত চরাঞ্চল উঁচু হয় এবং এতে বালু ও আগাছার পরিমাণ তুলনামূলক বেশি থাকে, কিন্তু পলির পরিমাণ কম থাকে। আগাম রোপণ/বপনকৃত ফসল এবং মাঠে দীর্ঘস্থায়িত্বকাল বিশিষ্ট ফসল এ চরাঞ্চলের জন্য নির্বাচন করা হয়। এ ধরনের চরে মসলা ফসলের মধ্যে রসুন, পেঁয়াজ, মুড়িকাটা পেঁয়াজ (ছোট কন্দ রোপণ করে পেঁয়াজ উৎপাদন), মরিচ, সাধারণত একক বা মিশ্র ফসল হিসেবে চাষ করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে দ্বীপ চরাঞ্চল নিচু হয় এবং তেমন একটা আগাছা থাকে না, কিন্তু পলির পরিমাণ বেশি থাকে। বিলম্বে রোপণ/বপনকৃত ফসল এবং মাঠে স্বল্প স্থায়িত্বকাল বিশিষ্ট ফসল এ চরাঞ্চলের জন্য নির্বাচন করা হয়। এ ধরনের চরাঞ্চলে সাধারণত পেঁয়াজ একক ফসল কিংবা পেঁয়াজের ভেতর কালিজিরা, ধনিয়া মিশ্র ফসল হিসেবে চাষ করা হয়।   
মিশ্র ফসল
একই জমিতে একসঙ্গে দুই বা ততোধিক প্রজাতির ফসল চাষ করার পদ্ধতিকে মিশ্র ফসল চাষ বলা হয়ে থাকে। ভূমি, শ্রম, পুষ্টি উপাদান, পানি, আলোর সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করে মিশ্র ফসলের মাধ্যমে প্রতি একক জমি থেকে একক ফসলের তুলনায় মোট উৎপাদন, আয় এবং ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করা যায়। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হয় এবং ফসল চাষের সফলতা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে চরাঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা ১৪৫-১৬২%। পরিকল্পিত মিশ্র ফসল চাষের মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা অনেক বৃদ্ধি করা সম্ভব। অন্যদিকে একই জমিতে একটি নির্দিষ্ট বিন্যাস অনুসরণ করে দুই ধরনের ফসল চাষের পদ্ধতিকে আন্তঃফসল চাষ বলা হয়। চরে সারি কিংবা ফালি পদ্ধতিতে আন্তঃফসল চাষ করা যায়।
সরাসরি বীজ বপনকৃত পেঁয়াজের ভেতর কালিজিরা/ধনিয়ার মিশ্র ফসল চাষ
দ্বীপ চরাঞ্চলে সরাসরি বীজ  বপনকৃত পেঁয়াজের ভিতর কালিজিরা বা ধনিয়া অথবা পেঁয়াজের ভেতর কালিজিরা ও ধনিয়া উভয়ই একই সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে চাষ করা হয়ে থাকে। পাওয়ার টিলার দিয়ে দুই বার চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। শেষ চাষের সময় প্রাপ্যতা সাপেক্ষে পচা গোবর সার, বিঘাপ্রতি ৩৫ কেজি টিএসপি, ২৫ কেজি এমওপি, ২০ কেজি জিপসাম, ২-৩ কেজি দস্তা সার এবং ১-২ কেজি বোরন সার প্রয়োগ করা হয়। জমিতে রসের ঘাটতি থাকলে পানি দিয়ে সার প্রয়োগ করতে হয়। পেঁয়াজের ৩টি জাত যথা বারি পেঁয়াজ-১, বারি  পেঁয়াজ-৪ এবং বারি পেঁয়াজ-৬ জাত চরে চাষের উপযোগী, তবে বারি পেঁয়াজ-৪ খুবই উন্নত জাত। কালিজিরা ও ধনিয়ার উন্নত জাত হলো যথাক্রমে বারি কালিজিরা-১ ও বারি            ধনিয়া-২। ডিসেম্বর মাসে পেঁয়াজ (৮০০-১০০০ গ্রাম/বিঘা), ধনিয়া (১.০-১.৫ কেজি/বিঘা) এবং কালিজিরা (৮০০-১০০০ গ্রাম/বিঘা)-র বীজ একই সাথে বপন করা হয়। পেঁয়াজের ভেতর ধনিয়া ও কালিজিরা উভয়ই একই সাথে মিশ্র ফসল চাষ করলে ধনিয়া ও কালিজিরার বীজ হার অর্ধেক করে হবে। পরে বালু দিয়ে বীজ ঢেকে দেয়া হয়। পেঁয়াজ বীজ বপনের পূর্বে প্রতি কেজি বীজ ২ গ্রাম প্রোভ্যাক্স ছত্রাকনাশকের মাধ্যমে শোধন করে নিতে হবে। ধনিয়া বীজ পানিতে ২৪-৪৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে এবং পরে শুকিয়ে বপন করতে হয়। কালিজিরা বপনের পূর্বে বীজ কমপক্ষে ২ দিন রোদে শুকিয়ে এবং ঠা-া করে পরে ১০-১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজাতে হবে। পরে প্রতি কেজি বীজ ২ গ্রাম প্রোভ্যাক্স ছত্রাকনাশকের মাধ্যমে শোধন করে নিতে হবে। শোধনকৃত বীজ রোদে শুকিয়ে ঝুরঝুরা করে বপন করতে হবে। অনেক চরাঞ্চলে কৃষক চাষ না দিয়েই বীজ বপন করে থাকে। বীজ বপনের ২০-২৫ দিন পর পানি সেচ দিয়ে বিঘাপ্রতি            ১৫-২০ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয়। বপনের ৪০-৪৫ দিন পর আগাছা পরিষ্কার করে পানি দেয়া হয় এবং পুনরায় ১৫-২০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করা হয়। বপনের ৬০-৭০ দিন পর পুনরায় আগাছা নিড়িয়ে ও সেচ দিয়ে ১৫-২০ কেজি ইউরিয়া সার দেয়া হয়। রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য লুনা সেন্সেশন                (১ মিলি/লিটার পানি)/রোভরাল (২ গ্রাম/লিটার পানি)/এমিস্টার টপ (১ মিলি/লিটার পানি) ১৫ দিন পর পর পর্যায়ক্রমে স্প্রে করতে হবে। থ্রিপস দমনের জন্য সাকসেস/ইমিটাফ (১ মিলি/লিটার পানি) স্প্রে করতে হবে। অনেক কৃষক জমিতে প্রায় ২৫-৩০% ধনিয়া রেখে বাকিটা তুলে বাজারে বিক্রয় করে থাকে। আবার অনেক কৃষক ধনিয়া ও কালিজিরার বীজ হারের এক-        তৃতীয়াংশ বপন করে। অনেক কৃষক বিভিন্ন জমির সীমানায়, রসুন, ধনিয়া, কালিজিরা করে থাকে। মার্চ মাসের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজ সংগ্রহ করা হয়। পেঁয়াজ সংগ্রহের ১৫-২০ দিন পূর্বে ধনিয়া ও কালিজিরার বীজ সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। তবে ধনিয়া পাতা বপনের ১.০-১.৫ মাসের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়। পেঁয়াজের ফলন জাতভেদে ২.০-২.৫ টন/বিঘা। কালিজিরা ফলন বিঘাপ্রতি ১২০-১৪০ কেজি এবং ধনিয়ার ফলন বিঘাপ্রতি ১৫০-২০০ কেজি (বীজ) ও ৫০০-৭০০ কেজি (কাঁচা পাতা)।
মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভেতর কালিজিরার মিশ্র ফসল চাষ
সংযুক্ত চরাঞ্চলে পাওয়ার টিলার দিয়ে দুই বার চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। শেষ চাষের সময় প্রাপ্যতা সাপেক্ষে পচা গোবর সার, বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া, ৪০ কেজি টিএসপি, ৩০ কেজি এমওপি, ২০ কেজি জিপসাম, ২-৩ কেজি দস্তা সার এবং ১-২ কেজি বোরন সার প্রয়োগ করা হয়। অক্টোবর ১৫-নভেম্বর ১৫ তারিখের মধ্যে পেঁয়াজের ৪-৬ গ্রাম ওজনের সেট (পেঁয়াজের ছোট কন্দ) রোপণ করতে হবে। পেঁয়াজের রোপণ দূরত্ব হবে ১৫ সেমি. ী ১০ সেমি.। বিঘাপ্রতি ৩০০-৪০০ কেজি সেটের প্রয়োজন হয়। সেট রোপণের ২০-২৫ দিন পর বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হবে এবং আগাছা নিড়িয়ে সেচ দিতে হবে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য বর্তমানে ৩টি জাত যথা বারি পেঁয়াজ-১, বারি পেঁয়াজ-৪ এবং বারি পেঁয়াজ-৬ আছে, তবে বারি পেঁয়াজ-৪ এর ফলন বেশি। সেট রোপণের ৪০-৪৫ দিন পর বিঘাপ্রতি ১ কেজি বারি কালিজিরা-১ এর শোধনকৃত বীজ বপন করতে হবে এবং নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করে সেচ দিতে হবে। সেট রোপণের ৬০-৬৫ দিনের পর বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া সার দিয়ে এবং নিড়িয়ে সেচ দিতে হবে। রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য লুনা সেন্সেশন রোভরাল (২ গ্রাম/লিটার পানি)/এমিস্টার টপ (অ্যাজোস্কিস্ট্রোবিন+ডাই ফেনোকোনাজল) (১ মিলি/লিটার পানি) ১৫ দিন পরপর পর্যায়ক্রমে স্প্রে করতে হবে। থ্রিপস দমনের জন্য সাকসেস/ইমিটাফ (১ মিলি/ লিটার পানি) স্প্রে করতে হরে। জানুয়ারি ১৫-ফেব্রুয়ারি ১৫ তারিখের মধ্যে পেঁয়াজের কন্দ তুলতে হবে। মুড়িকাটা পেঁয়াজে ফুলের দ- উৎপাদন হয়, তা মাঝে মাঝে সংগ্রহ করে খাওয়া যায় এবং বাজারে বিক্রয় করা যায়। মার্চ মাসে কালিজিরা সংগ্রহ করা হয়। মুড়িকাটা পেঁয়াজের ফলন জাতভেদে বিঘাপ্রতি ২.০-৩.০ টন এবং কালিজিরার ফলন বিঘাপ্রতি ১২০-১৪০ কেজি। পরে সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসল ঘরে তোলা হয় কিংবা বাজারজাত করা হয়।  
রসুনের সাথে কালিজিরার মিশ্র ফসল চাষ
অনেক কৃষক সংযুক্ত চরাঞ্চলে একক ফসল হিসাবে রসুন চাষ করে থাকে, তবে মিশ্র ফসল হিসেবেই চাষ করা ভালো। পাওয়ার টিলার দিয়ে দুই বার চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। শেষ চাষের সময় প্রাপ্যতা সাপেক্ষে পচা গোবর সার, বিঘা প্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া, ৪০ কেজি টিএসপি, ৩৫ কেজি এমওপি, ২০ কেজি জিপসাম, ২ কেজি দস্তা সার এবং ১ কেজি বোরন সার প্রয়োগ করা হয়। অক্টোবর ১৫-নভেম্বর ১৫ মধ্যে রসুনের ০.৭৫-১.০ গ্রাম ওজনের বীজ কোয়া ১৫ সেমি. ী ১০ সেমি দূরত্বে রোপণ করতে হবে। বিঘাপ্রতি ৭০-৮০ কেজি বীজের প্রয়োজন হবে। কোয়া রোপণের ২০-২৫ দিন পর বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হবে এবং আগাছা নিড়িয়ে সেচ দিতে হবে। রসুন উৎপাদনের জন্য বর্তমানে ৪টি জাত যথা বারি রসুন-১, বারি রসুন-২, বারি রসুন-৩ এবং বারি রসুন-৪ আছে, তবে বারি রসুন-১ ও বারি রসুন-৪ এর ফলন বেশি। কোয়া রোপণের ৪০-৪৫ দিন পর বিঘাপ্রতি ১ কেজি বারি কালিজিরা-১ এর শোধনকৃত বীজ বপন করতে হবে এবং নিড়ানি দিয়ে মাটি কোপিয়ে দিতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করে সেচ দিতে হবে। কোয়া রোপণের ৬০-৬৫ দিনের পর বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া সার দিয়ে এবং নিড়িয়ে সেচ দিতে হবে। রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য লুনা সেন্সেশন (১ মিলি/লিটার পানি)/রোভরাল (২ গ্রাম/লিটার পানি)/এমিস্টার টপ (ইমিডাক্লোরপ্রিড) (১মিলি/লিটার পানি) ১৫ দিন পর পর পর্যায়ক্রমে স্প্রে করতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসে থ্রিপস আক্রমণ করে থাকে। থ্রিপস দমনের জন্য সাকসেস/ইমিটাফ (অ্যাজোস্কিস্ট্রোবিন+ ডাইফেনোফোনাজল) ইমিডাক্লোরপ্রিড (১ মিলি/লিটার পানি) স্প্রে করতে হবে। ফেব্রুয়ারি ১৫-মার্চ ১৫ মধ্যে রসুনের কন্দ তুলতে হবে। মার্চ মাসে কালিজিরা সংগ্রহ করা হয়। রসুনের ফলন জাতভেদে বিঘাপ্রতি ১.০-১.৫ টন এবং কালিজিরার ফলন বিঘাপ্রতি ১২০-১৪০ কেজি। পরে সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসল ঘরে তোলা হয় কিংবা বাজারজাত করা হয়।
মরিচের সাথে ধনিয়ার মিশ্র চাষ                        
সংযুক্ত চরাঞ্চলে মরিচ একক ফসল কিংবা মরিচ (স্থানীয় বা হাইব্রিড জাত) এর সাথে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও রসুনের আন্তঃফসল চাষ করা হয়ে থাকে। পাওয়ার টিলার দিয়ে দুই বার চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। শেষ চাষের সময় প্রাপ্যতা সাপেক্ষে পচা গোবর সার, বিঘাপ্রতি ১৫-২০ কেজি ইউরিয়া, ৩০-৩৫ কেজি টিএসপি, ২০-২৫ কেজি এমওপি, ২০ কেজি জিপসাম, ২-৩ কেজি দস্তা সার এবং ১-২ কেজি বোরন সার প্রয়োগ করা হয়। সেপ্টেম্বর ১৫-অক্টোবর ১৫ জমিতে সরাসরি বা সারি করে বীজ বপন করা হয়ে থাকে। প্রতিবিঘা জমিতে ১ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। বীজতলায় চারা তৈরি করেও চারা রোপণ করা যেতে পারে। প্রতি কেজি বীজকে ২ গ্রাম অটোস্টিন দিয়ে শোধন করে নিতে হবে। সারি পদ্ধতিতে ৫০ সেমি. ী ২৫ সেমি. দূরত্ব বজায় রাখা ভালো। মরিচের মধ্যে প্রতিবিঘায় ২ কেজি ধনিয়ার বীজ বপন করা হয়। বপন/রোপণের ২০-২৫ দিন পর আগাছা নিড়িয়ে পানি দিয়ে বিঘাপ্রতি ৮-১০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করা হয়। ফুল আসা শুরু হলে বিঘাপ্রতি ১৫-২০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। ফল ধরা শুরু হলে বিঘাপ্রতি ৫০ গ্রাম বোরিক এসিড দিতে হবে। বিভিন্ন রোগ দমন করার জন্য সানভিট/কুপ্রাভিট (কপার অক্সিক্লোরাইড) (৭ গ্রাম/লিটার পানি)/টিল্ট (০.৫ মিলি/লিটার পানি)/ অটোস্টিন (২ গ্রাম/লিটার পানি) ৮-১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে। পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণের জন্য টাফগর/এডমায়ার (২ মিলি/লিটার পানি)/ভার্টিমেক/থিওভিট (২ মিলি/লিটার পানি)/সাকসেস (১.২ মিলি/লিটার পানি)/মেলাথিয়ন (১ মিলি/লিটার পানি) মাঝে মাঝে স্প্রে করতে হবে। জমি থেকে মরিচ জাতভেদে ৪-৫ বার সংগ্রহ করা যায়। প্রতিবার সংগ্রহের পর বিঘাপ্রতি ৪-৫ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা হয়। মরিচের জমির ভেতর ৮-১০ ফুট পর পর পানি সেচের জন্য ড্রেন এবং এরই সাথে ড্রেন বরাবর ২-৩ ফুটের জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও রসুন চাষ করা যায়। অনেক কৃষক আইল তৈরি করে আইলে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও রসুন রোপণ করে থাকে। ধনিয়া পাতা বপনের ১.০-১.৫ মাসের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়। জাতভেদে মরিচের ফলন বিঘাপ্রতি ২-৪ টন এবং ধনিয়ার কাঁচা পাতার ফলন বিঘাপ্রতি ৮০-১২০ কেজি। অনেক কৃষক চরাঞ্চলে বালুর উপরে পলিথিন বিছিয়ে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে পাকা মরিচ শুকিয়ে থাকে। অন্যদিকে কোন কোন কৃষক পলিথিন না বিছিয়েই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সরাসরি বালুর উপর মরিচ শুকায়, যা মোটেই উচিত নয়।
তাছাড়া অনেক কৃষক ফেব্রুয়ারি মাসে পাটশাকের সাথে ধনিয়া মিশ্র ফসল চাষ করে থাকে। সংযুক্ত চরাঞ্চলে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে আখ রোপণ করে সারির মাঝে মাঝে বারি পেঁয়াজ-৫সহ অন্যান্য পেঁয়াজ চাষ করা যায়। ভুট্টা, চীনাবাদাম, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, ডাল, তেল ইত্যাদি ফসলের মধ্যেও মিশ্র বা আন্তঃফসল হিসেবে পেঁয়াজ, রসুন, কালিজিরা ও ধনিয়া চাষ করা যায়।


লেখক : ১প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র, বিএআরআই, ফরিদপুর; ২প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব), সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (অঞ্চল-১), বিএআরআই, বগুড়া, ৩বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র, বিএআরআই, ফরিদপুর। মোবাইল : ০১৭১১৫৭৩৩৬১, ই-মেইল : khanalauddinsrse@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon